ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ , ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
কক্সবাজারে ২ শিশু হত্যায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন ত্রিভুজ প্রেমের বলি জবি ছাত্র জোবায়েদ : পুলিশ চট্টগ্রাম বন্দর অচল হওয়ার আশঙ্কা এনসিপির জন্য সব দলের নিবন্ধন আটকে রেখেছে ইসি বিমানবন্দরে আগুন ফ্যাসিস্ট হাসিনার নাশকতার অংশ-আমান শেখ হাসিনা আসাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ সঠিক নয়-আইনজীবী আগ্রাসী রূপে ডেঙ্গু চালু হচ্ছে না শাহজালালের নতুন কার্গো ভিলেজ অন্তর্বর্তী সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায় যাওয়ার আহ্বান বিএনপির বিজয় নিয়ে ক্লাসে ফিরছেন শিক্ষকরা নতুন বছরে মাধ্যমিকের বই পাওয়া নিয়ে শঙ্কা আ’লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান ক্রমেই বাড়ছে বিদেশি ঋণের বোঝা মিথ্যা তথ্যের দ্রুত মোকাবিলা করতে ২৪ ঘণ্টা কাজ করতে হবে: সিইসি আতঙ্ক অস্থিরতায় ব্যবসায়ীরা বিএনপির সঙ্গে আইআরআই প্রতিনিধি দলের বৈঠক মা মাছ ধরা বন্ধ করতে হবেÑপ্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা পাঠাও চালককে মারধর করে দেড় লাখ টাকা ছিনতাই নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের মামলার আপিল শুনানি ৪ সপ্তাহ মুলতবি ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই ভবন নির্মাণ

রাজা রামমোহন রায়ের ২৫৩তম জন্মদিন আজ

  • আপলোড সময় : ২২-০৫-২০২৫ ১২:৩৪:২৪ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২২-০৫-২০২৫ ১২:৩৪:২৪ পূর্বাহ্ন
রাজা রামমোহন রায়ের ২৫৩তম জন্মদিন আজ
আজ ২২ মে বৃহস্পতিবার যুগপথিক রাজা রামমোহন রায়-এর ২৫৩তম জন্মবার্ষিকী। রাজা রামমোহন রায়ের জন্মদিন উপলক্ষে রাজধানীর পাটুয়াটুলীস্থ ২-৩-৪, লয়াল স্ট্রীটে বাংলাদেশ ব্রাহ্মসমাজ কর্তৃক আয়োজিত উপাসনা, শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, প্রার্থনা, ব্রহ্মসংগীত ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে সকলকে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশ ব্রাহ্মসমাজ।
জানা গেছে, রামমোহন রায় ১৭৭২ সালের ২২ মে আজকের দিনে ব্রিটিশ ভারতের রাধানগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলার নবজাগরণের আদি পুরুষ। তিনি প্রথম ভারতীয় যিনি ধর্মীয়-সামাজিক পুনর্গঠন আন্দোলন ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি একজন বাঙালি দার্শনিক। তৎকালীন রাজনীতি, জনপ্রশাসন, ধর্ম এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে তিনি উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখতে পেরেছিলেন। তিনি সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত হয়েছেন সতীদাহ প্রথা বিলুপ্ত করার প্রচেষ্টার জন্য। ভারতে দীর্ঘকাল যাবৎ বৈষ্ণব বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণ যেতে বা আত্মাহুতি দিতে বাধ্য করা হত। এই ঘৃণ্য প্রথার বিরুদ্ধে রামমোহন গর্জে উঠলেন, শুরু করলেন আন্দোলন, বিভিন্ন পুস্তক রচনা করে তিনি প্রমাণ করলেন সতীদাহ বা সহমরণ প্রথা শাস্ত্র বিরোধী। অবশেষে সমস্ত বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে ১৮২১ খ্রিস্টাব্দে সতীদাহ নিরোধ আইন পাস করাতে তিনি সক্ষম হন। ফলে সতীদাহ প্রথার হয় অবসান। তিনি বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধেও আন্দোলন করেন।
রামমোহন রায় কলকাতায় ২০ আগস্ট, ১৮২৮ সালে ইংল্যান্ড যাত্রার আগে দ্বারকানাথ ঠাকুরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ব্রাহ্মসমাজ স্থাপন করেন। পরবর্তীকালে এই ব্রাহ্মসমাজ এক সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলন এবং বাংলার পুনর্জাগরণের পুরোধা হিসাবে কাজ করে। বেদান্ত-উপনিষগুলি বের করবার সময়ই তিনি সতীদাহ অশাস্ত্রীয় এবং নীতিবিগর্হিত প্রমাণ করে পুস্তিকা লিখলেন ‘প্রবর্তক ও নিবর্তকের সম্বাদ’। প্রতিবাদে পুস্তিকা বের হল ‘বিধায়ক নিষেধকের সম্বাদ’। তার প্রতিবাদে দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুস্তিকা বের হয়। এই বছরেই ডিসেম্বর মাসে আইন করে সহমরণ-রীতি নিষিদ্ধ করা হয়। তবুও গোঁড়ারা চেষ্টা করতে লাগল যাতে পার্লামেন্টে বিষয়টি পুনর্বিবেচিত হয়। এই চেষ্টায় বাধা দেয়ার জন্য রামমোহন বিলেত যেতে প্রস্তুত হলেন। এব্যাপারে তাকে আর্থিক সহায়তা দান করেন প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। মোঘল সম্রাট ২য় আকবর তার দাবি ব্রিটিশ সরকারের কাছে পেশ করার জন্য ১৮৩০ সালে রামমোহনকে বিলেত পাঠান, তিনি রামমোহনকে রাজা উপাধি দেন। ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ নভেম্বর তিনি কলকাতা থেকে বিলেত যাত্রা করেন। দিল্লির বাদশাহ দ্বিতীয় আকবর তাকে ‘রাজা’ উপাধি দিয়ে ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে কিছুদিনের জন্য তিনি ফ্রান্সেও গিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন আধুনিক ভারতের সমাজ সংস্কারের অন্যতম পথিকৃৎ। রামমোহন রায় একেশ্বরবাদে বিশ্বাস করতেন। তিনি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মূর্তি পূজার বিরোধী ছিলেন। এই বিশ্বাস থেকে তিনি ব্রাহ্মসমাজ ও ব্রাহ্মধর্ম প্রতিষ্ঠা করেন। রামমোহন রায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আচরণীয় ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান মানতেন না ও তা প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করতেন। তিনি মনে করতেন সকল ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান কুসংস্কার ছাড়া কিছু নয়। রামমোহন রায় বেদের বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করে তার বক্তব্য প্রমাণ করেন। ১৮৩০ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ নভেম্বর তিনি কলকাতা থেকে বিলেত যাত্রা করেন। ১৮৩১ খ্রিষ্টাব্দের ৮ এপ্রিল রামমোহন লিভারপুলে পৌঁছলেন। ১৮৩২ খ্রিষ্টাব্দের শেষের দিকে কিছুদিনের জন্য তিনি ফ্রান্সেও গিয়েছিলেন। সেখানে ফরাসি সম্রাট লুই ফিলিপ কর্তৃক তিনি সংবর্ধিত হন। সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলে বসবাস করতে থাকেন। ১৮৩৩ খ্রিষ্টাব্দে মেনিনজাইটিস রোগে আক্রান্ত হন এবং প্রায় ৮ দিন জ্বরে ভুগে ২৭ সেপ্টেম্বরে মৃত্যবরণ করেন। তার মৃত্যুর দশ বছর পর দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘আনসার ডেল’ নামক স্থানে তার সমাধিস্থ করে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করে দেন। ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে মধ্য ব্রিস্টলে তার একটি মূর্তি স্থাপন করা হয়। আজ তাঁর জন্মদিনে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স